আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় সেতুর রেলিং ভেঙে যাত্রীবোঝাই বাস নদীতে পড়ে কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত হয়েছে। সোমবার সকাল ৭টার দিকে মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৭০ ফুট গভীর নদীতে পড়ে যায় বাসটি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাসটিতে প্রায় ৬০ জন যাত্রী ছিলেন । তাদের মধ্যে ১০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। পরে তাদেরই একজন মারা যান। উদ্ধার করা হয় আরও তিনজনের মৃতদেহ। সোমবার সন্ধ্যায় ক্রেন দিয়ে তুলে আনার চেষ্টা করা হয় বাসটিকে। ঝুলন্ত সেই বাস থেকেই উদ্ধার হয় আরও ৩২ জনের মৃতদেহ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, সকালে বাসটি করিমপুর থেকে মালদহ যাচ্ছিল। সকাল ৭টা ১০ মিনিট নাগাদ বাসটি দৌলতাবাদের বালিরঘাট ব্রিজের উপর দিয়ে যাওয়ার সময়ে রেলিং ভেঙে সোনার রত্নাকর নদীতে পড়ে সম্পূর্ণ ডুবে যায়। নদীর পলিতে আটকে যায় বাসের একটা অংশ। দুর্ঘটনার পর কিছুক্ষণ কেটে গেলেও উদ্ধার কাজ শুরু হয়নি বলে অভিযোগ করে স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছতেই তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশের দু’টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। আগুন নেভাতে দমকল এলে ইট-পাটকেল ছুড়ে তাদের কাজে বাধা দেয় জনতা। এর পর পুলিশ শূন্যে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিও চালায়।
রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন,‘কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। একটি লরিকে ওভারটেক করতে গিয়ে পানিতে পড়ে যায় বাসটি।’ উদ্ধার কাজ শুরু হতে দেরি হওয়া প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘নদীতে পানি বেশি থাকায় প্রাথমিকভাবে উদ্ধার কাজে সমস্যা হয়েছিল।’
খবর পেয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদের উদ্দেশে রওনা দেন। যাওয়ার আগে তিনি বলেন,‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ নিহতদের পরিবারপিছু ৫ লাখ, গুরুতর আহতদের ১ লাখ এবং আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সূত্র : আনন্দবাজার ও টাইমস অব ইন্ডিয়া